আপনার পুরুষ কুকুরের অশেষ সুখের জন্য

Authored by Prasenjit Dutta, From his own experience

  • অবসরপ্রাপ্ত সিভিল ইঞ্জিনিয়ার
  • প্রাক্তন সেক্রেটারি এবং প্রতিষ্ঠাতা, Pashupati Animal Welfare Society-PAWS, বারাসাত www.pawsrescue.in
  • অধুনা, সারাদেশে পোষা প্রাণীর জন্য প্রোডাক্ট সরবরাহকারী RKD Pet Shop-এর মালিক

আপনার বাড়িতে যে কোনো জাতের পুরুষ কুকুর আছে আর মিলনের মরসুমে অস্থির সময় কাটাচ্ছেন? এই ভিডিও আর বর্ণনা সেই গল্প বলে যা আপনার ডাক্তার বা ব্রিডার আপনাকে বলবেন না।

এখানেই সমাধান। মিলনের মরসুমে পুরুষ কুকুর হুক্কাহুয়া ডাকে আর কাঁদে। তারা আপনার বাড়ির চারপাশ থেকে ২ কিমি দূর পর্যন্ত মাদী কুকুরের গন্ধ পায়। জীবন হয়ে ওঠে কুকুর আর পরিবারের মানুষের জন্য অসহনীয়। সঙ্গীর কাছে যেতে না পেরে কুকুর আক্রমণাত্মকও হয়ে যায়। তাকে একটি মাদী সঙ্গী দিন, যেটি বন্ধ্যাকৃত। আপনার ভেটের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে প্রজনন করাবেন না। যদি করেন, ব্রিডাররা আপনার বাড়ির সামনে লাইন দেবে বাচ্চাগুলো সস্তায় কিনতে আর বিক্রি করবে নিম্ন আয়ের মানুষদের কাছে যারা মাত্র ৫,০০০ টাকায় বিদেশি জাতের কুকুর চায়! তারা ওই বাচ্চাগুলোকে কী খাওয়াবে? টেবিলের উচ্ছিষ্ট ছাড়া কিছুই নয়। আপনি একাই হবেন ওই বাচ্চাদের করুণ পরিণতির জন্য মূলত দায়ী। সেই অপরাধবোধ কি আপনার বিবেকের ওপর চান?

একটা জিনিস মনে রাখবেন। স্তন্যপায়ীদের মধ্যে শুধু মানুষ আর ডলফিনই যৌন কর্ম থেকে কোনো আনন্দ পায়। বাকিদের জন্য এটি শুধুই ফেরােমন গন্ধ দ্বারা চালিত এক প্রাকৃতিক প্রবৃত্তি। যদি গন্ধ না থাকে, তাদের কোনো তাড়নাও থাকে না। তাই আসুন নতুন বাচ্চা জন্ম না দিয়ে, ওদের জীবন দুর্বিষহ না করে দেখুন আপনার পুরুষ কুকুরকে কি ভাবে সুখী রাখবেন।

ভুলো আর ছ্যাগাকে দেখুন ভিডিওতে। ভুলো কাছাকাছি গিয়ে ছ্যাগার পেছন শুঁকে আগ্রহ দেখানোর চেষ্টা করে। ছ্যাগা বন্ধ্যাকৃত, তাই আর কোনও ধান্দাবাজি সহ্য করবে না। সে গর্জায় আর দাঁত বার করে। ভুলো পিছিয়ে আসে। অবশ্যই ছ্যাগা যেকোনো সময় ভুলোকে শোঁকার জন্মগত অধিকার রাখে।

ভুলো যেদিন থেকে ছ্যাগাকে সঙ্গী হিসেবে পেল, সেদিন থেকে সে শান্তশিষ্ট পত্নীনিষ্ট ভদ্রলোক হয়ে গেছে। হাঁটতে বের হওয়ার সময় সে আর কোনো মাদী কুকুরের দিকে যায় না। বাড়ির ভেতরে থাকা বা শক্তপোক্ত প্যাক-এ থাকা কুকুর সাধারণত একগামী হয়। মানুষের মতো, তারা সেই একটিমাত্র সঙ্গীর কাছে বিশ্বস্ত আর তার থেকে আতঙ্কিত থাকে। আর স্ত্রীর চোখ ফাঁকি না দিতে পারলে বেশিরভাগ পুরুষ মানুষের মতো তারাও একগামী থাকে 😂।

ভুলোর জীবনের প্রথম দুই বছর যখন ছ্যাগা ছিল না, আমরা খুব ঝামেলার সময় কাটাতাম। সে অদ্ভুত সময়ে বাইরে যেতে হুক্কাহুয়া ডাকত আর ঘন্টার পর ঘন্টা লীশ টেনে সব মাদীর গন্ধ শুঁকতে চাইত। কোনো মাদী কুকুর চোখে পড়লেই টানাটানি শুরু হতো আর তাকে ফিরিয়ে আনা খুব কষ্টকর হয়ে যেত।

ছ্যাগাকে ৮ মাস বয়সে দত্তক নেওয়া আর তাকে বন্ধ্যা করার পর, ভুলো খুব শান্ত হয়ে গেছে আর প্রতি মরসুমে ছ্যাগার সংকেতের অপেক্ষায় থাকতো । কিন্তু সে বুঝতে পারেনি যে এই অপেক্ষা হবে অশেষ।